এমন একটা জায়গা থেকে বিক্ষোভ শুরু হলো যেখানে শতকরা ৮২ ভাগ মানুষ ল্যাটিন আমেরিকার হিস্পানিক অভিবাসী। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি ঘোষণার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের বিতারণে মাঠে নামে তার প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
বেশকিছু মানুষকে গ্রেপ্তার এবং নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এমন না যে এই অভিবাসন সমস্যা কেবল ট্রাম্প প্রশাসন তার এই মেয়াদে এসেই প্রকটভাবে উপলব্ধি করছে। বছরের পর বছর ধরে উন্নত জীবনের আশায় বিশ্বব্যাপী মানুষের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই মেয়াদে এসে এক্ষেত্রে একধরনের দ্বিচারিতা বেশ ভালোভাবেই ফুটে উঠেছে। ভোটের আগে সব প্রার্থীর জন্যই অভিবাসী বৈধদের ভোট যখন জয়-পরাজয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে অন্যতম মুখ্য বিবেচনায় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, ভোটের পর এসে ট্রাম্পের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা ‘অভিবাসনবিরোধী’ বিষয়টার ওপর দেশের অভ্যন্তরে কতটা রাজনৈতিক ঐকমত্য আছে, এটা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি ছিল।
তবে এখানে ট্রাম্প বলে কথা। তিনি চলেন অনেকটাই নিজের একগুঁয়েমি সিদ্ধান্তের দ্বারা, যার ক্ষতিপূরণ এখন তাকে দিতে হচ্ছে। স্মরণকালের মধ্যে অন্যতম এই বিক্ষোভ ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহনশীলতার বিপরীতে তিনি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর মোটেও আস্থা রাখতে পারছেন না তিনি।
আর তাই প্রথম ধাপে মোতায়েন করেছেন ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার ১শ সদস্য, যা পরবর্তীতে ৪ হাজারে উন্নীত করা হয়। বিষয়টি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ট্রাম্পের উন্মাদ আচরণের প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন। এরপরও ক্ষান্ত না হয়ে তিনি নতুন করে মোতায়েন করেছেন ৭০০ মেরিন সেনা।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাস বলে, অভ্যন্তরীণ কোনো দাঙ্গা বা বিক্ষোভে বা সংঘাতে এধরনের ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন সেনা মোতায়েন নজিরবিহীন। আর তাই গভর্নর এটাকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অবৈধ এবং অপ্রয়োজনীয় উদ্যোগ বলে অভিহিত করে দেশের সব মানুষকে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাচিত দুজন সিনেটরও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, দেশে এই মুহূর্তে এমন কোনো যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে না, যার কারণে এধরনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সেনা মোতায়েন করার প্রয়োজন রয়েছে। এর বাইরেও যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে যে শিষ্টাচারের চর্চা রয়েছে, সেখানেও যেন সজোরে আঘাত করেছেন ট্রাম্প।
স্বশাসিত অঙ্গরাজ্যগুলোয় কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের আগে অঙ্গরাজ্যগুলোর পক্ষ থেকে এধরনের কোনো চাহিদা রয়েছে কি না তা যাচাই করার আগেই তিনি স্বশাসনের জায়গায় আঘাত করেছেন। এসবকিছুই পরিস্থিতিকে অনেক বেশি উত্তপ্ত করে তুলেছে। পরিস্থিতি এখন কেবল ট্রাম্পের অভিবাসী নীতির বিপরীতে নিছক একটি ট্রাম্পবিরোধী অবস্থানের বাইরে গিয়ে রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক - মোঃ আওলাদ হোসেন
নির্বাহী সম্পাদক - মোঃ মিনহাজ উদ্দিন (শাহরিয়ার)
_______________________
কার্যালয়ের ঠিকানা : টঙ্গী থানা সংলগ্ন তালতলা রোড,মাছিমপুর,টঙ্গী,গাজীপুর সিটি করর্পোরেশন।
মোবাইল নম্বর: +৮৮০১৮১৭-৫১৭২৮৯, +৮৮০১৭৮২-১৭০৭৪১
ই-মেইল- Thedailydhakarkagoj.com@gmail.com
All rights reserved (Itsahreiar) © 2025