মোঃ নুরুজ্জামান শেখ গাজীপুরঃ
গাজীপুর মহানগরের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের পূবাইলস্থ হারবাইদ ফাজিল (বিএ) মাদ্রাসার প্রাথমিক স্তরের এক শিক্ষক দীর্ঘ ৩-৪ মাস ক্লাস না করেই মাদ্রাসা অধ্যক্ষের সহায়তায় বেতন উঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, আব্দুল লতিফ নামের এক শিক্ষক অসুস্থতাজনিত কারণে দীর্ঘ ৩-৪ মাস ধরে মাদ্রাসায় না গিয়ে অধ্যক্ষ মাওলানা আলমগীর হোসেনের সহায়তায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন-ভাতা উঠাচ্ছেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ ঝাড়ছেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসার প্রাথমিক শাখার শিক্ষক মো. আব্দুল লতিফ শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। যে কারণে তিনি ৩ মাস ধরে মাদ্রাসার শ্রেণি পাঠদানে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। ফলে আমি মাদ্রাসার সকল শিক্ষকের পরামর্শে তার পরিবর্তে তার মেয়েকে দিয়ে ক্লাস করাচ্ছি এবং হাজিরা খাতায় লতিফ সাহেবের স্বাক্ষর গ্রহণ করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসায় এখন কোনো পরিচালনা পর্যদ নেই। আর আমি মানবিকতার দিক বিবেচনা করে তার পরিবার পরিজনের উপকারার্থে কাজটি করেছি। আইনগত দিক বিবেচনা করলে হয়তো আমি কাজটি ঠিক করিনি।’
অপরদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল লতিফের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। যার কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সোহেল রানা (আইসিটি ও শিক্ষা) মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো এবং ঘটনা সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১৯৪২ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানকার লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করার জন্য আসে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বর্তমানে নিজ ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন। যে কারণে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরকে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
জনৈক অভিভাবক অভিযোগ করেন, বছরখানেক আগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে বিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী জানতে পারেন, তার এডমিট কার্ড এসেছে মানবিক বিভাগের। ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের সাথে অসদাচরণ করেন।
পূবাইলের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে এডহক কমিটি গঠিত হলেও এই মাদ্রাসায় হয়নি। এখানেও এলাকাবাসী মাদ্রাসা অধ্যক্ষের উদ্যোগ না নেওয়াকে দায়ী করেন।
এলাকাবাসী জানায়, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।