নাজমুল আলম মুন্না, সাতক্ষীরাঃ একজন ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তির স্বার্থ চরিতার্থ করার কারণে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার বলে উল্লেখ করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। তিনি (১৬ নভেম্বর) শনিবার সকালে নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার জলাবদ্ধতা কবলিত দামারপোতা, ছাগলা স্লুইসগেট, কামারডাঙ্গা, বাগডাঙ্গা, বেতনা নদীর ওয়াপদা বাঁধ পরিদর্শনে যেয়ে উপরোক্ত উক্তিটি করেন।এ সময় তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার মত ইউনিয়ন পর্যায়ের জলাবদ্ধতার ভয়াবহ চিত্র দেখতে পান। তিনি দেখেছেন জনগণের কৃষি জমিগুলো জলাবদ্ধতার কারণে বিলের রূপ ধারণ নিতে।
এগুলোকে তিনি 'কৃষিজমি' না বলে 'বিল' বলাই শ্রেয়! বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি এলাকার ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি। পরিদর্শনের সময় কিছু বসতবাটিতে পানি থাকার কারনে বাড়ীর লোকজনের অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার খবর পান।পরিদর্শনকালে তার সাথে ছিলেন স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তি ও সাধারণ জনগন। জেলা প্রশাসক স্বচক্ষে এলাকা পরিদর্শনে যেয়ে তিনি কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে যান! কোন বৃষ্টি নেই, বন্যা নেই, তারপরও জলাবদ্ধতা! তিনি স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন যে এসমস্যা এক যুগেরও পুরোনো। তিনি এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার মুলকারন হিসাবে পানি বের হওয়ার জায়গা নেই বলে জানান । পাশের বেতনা নদী খনন করা হলেও এলাকার কাছাকাছি স্লুইসগেট এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী একজন নেতার কারণে নদী খননের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বাঁধা দেওয়ায় প্রায় ৬০০/৭০০ মিটার জায়গা ভরাট অবস্থায় থাকায় স্লুইসগেট অকার্যকর রয়েছে এবং নদীর প্রবাহদ্বার বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। একজন ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যবহার ও ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার কারণে সদর উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ জলাবদ্ধতার শিকার! জেলা প্রশাসক জানতে পারেন, উক্ত তথাকথিত ক্ষমতাধর ব্যক্তি মাছের ঘের করে স্থানে স্থানে নদীর প্রবাহ মূখ আঁটকে দিয়েছে। এই কারণে স্লুইসগেট দিয়েও লোকালয়ের পানি নদী দিয়ে বের হতে পারছেনা। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোনে বিষয়টি অবিহিত করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নদীর অখননকৃত অংশটুকু খনন শেষ করে স্লুইসগেটের মুখ খুলে দেওয়ার জন্য অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।দ্রুতই সদর উপজেলার বেতনা নদীতে অবস্থিত 'ছাগলা' স্লুইসগেট এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে অচিরেই মুক্তি পাবেন বলে আশা করেছেন।